দুপুরে খেয়েই ভাতঘুম দেন? এই অভ্যাস কি ভাল?

 দুপুরে খেয়েই ভাতঘুম দেন? এই অভ্যাস কি ভাল? ব্যাখ্যা দিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা 



দুপুরের খাবারের পর ঘুমানো, যা সাধারণত 'ভাতঘুম' নামে পরিচিত, অনেকের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। এই অভ্যাসের উপকারিতা এবং প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে NASA-এর একটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা রয়েছে।

NASA-এর গবেষণা এবং পাওয়ার ন্যাপের ধারণা:

NASA ১৯৯৫ সালে একটি গবেষণায় দেখায় যে, ২৬ মিনিটের একটি সংক্ষিপ্ত ঘুম (পাওয়ার ন্যাপ) কর্মক্ষমতা ৩৪% এবং সতর্কতা ৫৪% পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে। এই গবেষণায় পাইলটদের উপর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল, যেখানে দেখা যায় যে যারা এই সংক্ষিপ্ত ঘুম নিয়েছিলেন, তারা কর্মক্ষমতা এবং সতর্কতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি প্রদর্শন করেছেন।

পাওয়ার ন্যাপের উপকারিতা:

সংক্ষিপ্ত সময়ের ঘুমের ফলে নিম্নলিখিত সুবিধা পাওয়া যায়:

  • সতর্কতা বৃদ্ধি: সংক্ষিপ্ত ঘুম মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে সতর্কতা বৃদ্ধি করে, যা কর্মক্ষেত্রে বা দৈনন্দিন কাজে সহায়তা করে।

  • কর্মক্ষমতা উন্নতি: সংক্ষিপ্ত ঘুমের ফলে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা কাজের গুণগত মান উন্নত করে।

  • স্মৃতিশক্তি এবং সৃজনশীলতা বৃদ্ধি: সংক্ষিপ্ত ঘুম স্মৃতিশক্তি এবং সৃজনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে, যা শেখা এবং সমস্যার সমাধানে সহায়ক।

ঘুমের সময়কাল এবং প্রভাব:

ঘুমের সময়কাল অনুযায়ী প্রভাব ভিন্ন হতে পারে:

  • ১০-২০ মিনিটের ঘুম: এই সময়ের ঘুম সতর্কতা এবং কর্মক্ষমতা বাড়ায়, এবং ঘুম থেকে ওঠার পর ভারমুক্ত অনুভূতি দেয়।

  • ৩০ মিনিটের বেশি ঘুম: এই সময়ের ঘুম গভীর ঘুমের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, যা জাগরণের পর কিছুটা বিভ্রান্তি বা ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে, যা 'স্লিপ ইনর্শিয়া' নামে পরিচিত।

ঘুমের সময় এবং পরিবেশ:

ঘুমের সর্বোত্তম সময় এবং পরিবেশ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ:

  • সময়: দুপুর ১টা থেকে ৩টার মধ্যে ঘুমানো সবচেয়ে উপযোগী, কারণ এই সময়ে শরীরের প্রাকৃতিক ঘুমের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

  • পরিবেশ: শান্ত, অন্ধকার এবং আরামদায়ক পরিবেশ ঘুমের গুণগত মান উন্নত করে।

উপসংহার:

দুপুরের খাবারের পর সংক্ষিপ্ত সময়ের ঘুম নেওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে কর্মক্ষমতা এবং সতর্কতা বৃদ্ধিতে। তবে, ঘুমের সময়কাল নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ যাতে এটি রাতের ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং দৈনন্দিন রুটিন অনুযায়ী এই অভ্যাস গ্রহণ করা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.